সাধারনত দুইভাবে এটা করা যায়। যেভাবেই করি না কেন আমাদের খেয়াল রাখতে হবে সেটা যাতে মাছের জন্য সবচাইতে কম স্ট্রেসফুল হয়। ১) সাধারন উপায়ঃ মাছ স...
সাধারনত দুইভাবে এটা করা যায়। যেভাবেই করি না কেন আমাদের খেয়াল রাখতে হবে সেটা যাতে মাছের জন্য সবচাইতে কম স্ট্রেসফুল হয়।
১) সাধারন উপায়ঃ মাছ সাধারনত প্লাস্টিক ব্যাগে করে বাসায় নিয়ে আসি আমরা। যদি মাছ প্যাক করার পরে ৪-৫ ঘন্টা পার হয়ে যায় তাহলে বাসায় এনে ব্যাগের মুখ খোলার দরকার নাই। কারন ব্যাগে থাকা এমোনিয়া বাতাসের অক্সিজেনের সংস্পর্শে আসলে PH পরিবর্তন হতে পারে। তখন সেটা মাছের জন্য আরো ক্ষতিকর হতে পারে। এরপর ব্যাগটা ফিশ ট্যাংকে ভাসিয়ে দিন ২০-৩০ মিনিটের জন্য এই সময়ে ব্যাগের পানির তাপমাত্রা আপনার ট্যাংকের পানির তাপমাত্রার সাথে এডজাস্ট হবে। এরপর একটি কাচি দিয়ে ব্যাগের মুখটা কেটে মাছগুলোকে খুব সাবধানে নেট দিয়ে ধরে ট্যাঙ্কে ছেড়ে দিন। যদি সরাসরি মাছ ট্যাংকে ছেড়ে দেন তাহলে হটাৎ তাপমাত্রা পরিবর্তনের কারনে মাছ খুবই স্ট্রেসড হয়ে যাবে যার কারনে পরবর্তিতে খাবার না খাওয়া/হটাৎ মরে যাওয়া/লুকিয়ে থাকা/রোগাক্রান্ত হওয়া এইসব হতে পারে। খেয়াল রাখবেন কোনভাবেই যাতে ব্যাগের পানি আপনার ট্যাংকে প্রবেশ না করে। যখন এটা করবেন অবশ্যই একুরিয়ামের লাইট বন্ধ রাখবেন এবং রুমও একটু অন্ধকার রাখার চেস্টা করবেন। অন্ধকার পেলে মাছ ব্যাগ থেকে বের হবার জন্য ছটফট কম করবে এবং কম স্ট্রেসড হবে। এই সিস্টেম হার্ডি মাছ যেমন, দানিয়ো, হোয়াইট ক্লাউড মিনো, প্লাটি, মলি, সোর্ডটেইল, বার্ব, গোল্ডফিশ ইত্যাদির ক্ষেত্রে ফলো করা যেতে পারে।
বিশেষ সতর্কতাঃ ভুলেও ব্যাগের পানি আপনার ট্যাংকে দিবেন না। ব্যাগের পানিতে অনেক টক্সিন, প্যারাসাইট হাবিজাবি থাকতে পারে।
২) ড্রিপ এক্লিমেশন (Drip acclimation):
একটা ছোট পাত্রে(বালতি/বোল) আপনার নতুন কেনা মাছ ব্যাগের পানি সহ ছাড়ুন। একটি এয়ার লাইন টিউবের এক প্রান্ত আপনার ট্যাংকে দিন এবং অপর প্রান্তে মুখ দিয়ে শিফন তৈরি করুন। এরপর একটি নট(গিট্টু) বাধুন এমন ভাবে যাতে সেকেন্ডে ২-৪ ফোটা করে পানি বের হয়। এরপর এভাবে ড্রিপ ড্রিপ করে পানি ছাড়তে থাকুন আপনার বোলে আগামী ২-৩ ঘন্টা। এইসময়ের ভিতরে বোলের পানির তাপমাত্রা, Ph, hardness, nitrate মেইন ট্যাংকের সাথে ধীরে ধীরে ম্যাচ করবে এবং আপনার নতুন কেনা মাছও ধীরে ধীরে নতুন পরিবেশের সাথে অভ্যস্থ হয়ে যাবে। সবার শেষে একটি নেট দিয়ে মাছ ধরুন এবং মেইন ট্যাংকে ছেড়ে দিন।
এটা সিস্টেম দামী এবং কম শক্তিশালী মাছের ক্ষেত্রে ফলো করা ভাল। যেমন ডিসকাস, জার্মান ব্লু রাম, ডোয়ার্ফ সিকলিড, হাই ব্রিডের এঞ্জেল, ফ্যান্সি গাপ্পি, রেইনবো, শ্রিম্প ইত্যাদি। এসব মাছ পানিতে একটু উল্টাপাল্টা হলেই মারা যায়।
বিশেষ সতর্কতাঃ ভুলেও ব্যাগের পানি আপনার ট্যাংকে দিবেন না। ব্যাগের পানিতে অনেক টক্সিন, প্যারাসাইট হাবিজাবি থাকতে পারে।
পার্সোনালি আমি যেভাবে করিঃ ব্যাগের মুখ খুলে ৩০মিনিটের জন্য ট্যাংকে ভাসিয়ে রাখি। এরপর ১০ মিঃ লিঃ করে ট্যাংকের পানি ব্যাগে এড করি প্রতি ১৫ মিনিট পর পর, প্রায় ২-৩ ঘন্টা। এরপর নেট দিয়ে মাছ ধরে ট্যাংকে ছেড়ে দেই। এই সিটেম ফলো করে এখনো আমার কোন মাছ মারা যায় নি অথবা কোন ধরনের অসুস্থতায় পরেনি। শুধুমাত্র একবার একটা ফিমেল গাপ্পি কেনার ছয়দিন পরে মারা গিয়েছিলো ব্লোট হয়ে।
*** নতুন মাছ ট্যাংকে ছাড়ার পর এক দুই ঘন্টা ট্যাংকের লাইট অফ রাখবেন। পোস্টে কোন ভুল থাকলে অথবা কোন টিপস থাকলে আশাকরি সিনিয়র একুয়ারিস্টরা সাহায্য করবেন। সবাইকে ধন্যবাদ, হ্যাপি ফিশকিপিং।
© লেখক - সুব্রত দাশ
COMMENTS