অনেকেই জিজ্ঞেস করেন, মিড টেক প্লান্টেড ট্যাঙ্ক কিভাবে করবো। সাধারনত লো টেক থেকে মিড টেকের মধে পার্থক্য অনেক এবং খরচের পরমান টাও একটু বেশি। ম...
অনেকেই জিজ্ঞেস করেন, মিড টেক প্লান্টেড ট্যাঙ্ক কিভাবে করবো। সাধারনত লো টেক থেকে মিড টেকের মধে পার্থক্য অনেক এবং খরচের পরমান টাও একটু বেশি। মিড টেক প্লান্টেড ট্যাঙ্ক অনেক বড় একটু টপিক। তারপরও আমি কিছু প্রধান বিষয় গুলো আপনাদের জানাচ্ছি।
প্রথমেই বলে রাখি, মিডটেক অথবা লোটেক সব ট্যাঙ্কেই মাটি দিতেই হবে। এবং CO2 আবশ্যক।
সাবস্ত্রেট/বেস/ বটমঃ
একটি ভালো এবং শক্তিশালী সাবস্ত্রেটের উপর মিডটেকের সাফল্য অনেকাংশে নির্ভর করে। সাবস্ত্রেট হিসেবে আপনার বাজেট ভালো হলে আপনি একুয়া/কমার্শিয়াল সএল নিয়ে করতে পারেন। অন্যথায় বাগানের হলুদ/সোনালি বর্ণের মাটি নিতে পারেন। অনেকেই জানেন যে, একুয়া/কমার্শিয়াল সএলে প্ল্যান্টের জন্য দরকারি পুষ্টি বিদ্যমান থাকে। যেহেতু বাগানের মাটিতে স্বল্প পরিমানে পুষ্টি থাকে, তাই প্ল্যান্টের দীর্ঘমেয়াদী পুষ্টি নিশ্চিত করার জন্য, আমাদের মাটির সাথে কিছু সাঁর মিশাতে হবে। যেমন, অসমকট, লিলি ট্যাবলেট, এনপিকে এইগুলা যথেষ্ট।
মাটি প্রথমে ভালো করে শুকিয়ে ঝরঝরে করে গুড়ো করে নিবেন। এতে করে মাটির সাথে সাঁর গুলো ভালো ভাবে মিশবে। তারপর সেই মাটি আমরা ট্যাঙ্কে দিবো। কমপক্ষে ২ ইঞ্চি থেকে ৪ ইঞ্চি পর্যন্ত মাটি দিতে হবে। (ট্যাঙ্কের আয়তন হিসেবে)।
মাটি দেয়ার পর, এর উপরে ১/২ অথবা ১ ইঞ্ছি লেয়ারের সিলেট বালি দিতে হবে। সিলেট বালি মাটিকে পানির সাথে মিশে যাওয়া থেকে বাধা দিবে।
লাইটঃ
প্ল্যান্টের বেচে থাকা,ভালো ভাবে বেড়ে উঠা এবং ভালো কালারের জন্য ভালো লাইটের বিকল্প নেই। আপনার বাজেট বেশি হলে আপনি কমার্শিয়াল লাইট নিতে পারেন। আর যদি কম বাজেটের মধ্যে ভালো মানের লাইট চান তাহলে স্ট্রিপ কিনে নিজে বানিয়ে নিতে পারেন। বাজারে অনেক ধরনের স্ট্রিপ পাওয়া যায়। এসএমডি ৮৫২০/৫৭৩০ এবং মেগা। আমি পার্সোনালী বলবো মেগা স্ট্রিপের ইউসার বেশি এবং এর কার্যকারিতাও ভালো। সব মডেলের স্ট্রিপ ৩৯ ইঞ্চি হোয়ে থাকে।
এসএমডি ৮৫২০/৫৭৩০ স্ট্রিপ ১৮-২২ ওয়াট সম্পন্ন হয় এবং মেগা ৩০ ওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন। উভয় স্ট্রিপ গুলই ১২ ভোল্টের ডিসি পাওয়ারের। তার মানে আপনাকে পাওয়ার সাপ্লাই ব্যাবহার করতে হবে। মেগা স্ট্রিপের সাথে নীল কালারের স্ট্রিপ দেয়া ভালো এতে করে প্ল্যান্টের শালক সংশ্লেষণ ভালো হয়। নীল স্ট্রিপ একটাই মডেলের হয়। এবং ১২ ভোল্টের ডিসি পাওয়ারের। আপনার ট্যাঙ্কের সাইজ অনুযায়ী স্ট্রিপের পরিমান নিতে হবে এবং সাথে ওই পরিমান ক্ষমতা সম্পন্ন পাওয়ার সাপ্লাই নিতে হবে। যেমন, ১২ ভোল্ট ১০/২০/৩০ এমপিআর। অনেকেই লাইট বানায়, আপনি চাইলে তাদের মাধ্যমে লাইট বানাতে পারেন।
ট্যাঙ্কের সেটআপের পর থেকেই আপনাকে লাইট জালাতে হবে। প্রথমে ৪ ঘণ্টা লাইট জালানো উত্তম এরপর মাসিক পর্যায়ক্রমে সময় বাড়াতে হবে। মনে রাখবেন, নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত লাইটিং অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বেশি লাইটের কারনে আপনি এলগি সমস্যায় পরবেন।
ফিল্টার
ফিল্টার একটি আবশ্যক উপকরন। ফিল্টার ছাড়া সফল প্লান্টেড ট্যাঙ্ক কল্পনাই করা যায়না। আপনার ট্যাঙ্কের পানি পরিমানের (লিটার) ৬ গুন হিসেব করে ফিল্টার নিতে হবে। ধরুন আপনার ট্যাঙ্কে ১০০ লিটার পানি ধরে। তাহলে ১০০ *৬ = ৬০০ এলপিএইচ এর ফিল্টার নিতে হবে। বেশি নিলেও সমস্যা নেই।
হাংঅনব্যাক ফিল্টারঃ ছোট থেকে মাঝারি (১ থেক ৩ ফিট) প্ল্যান্টেড ট্যাঙ্কের জন্য সবচেয়ে ভালো ফিল্টার হোল হাংঅনব্যাক অর্থাৎ হব ফিল্টার। হব ফিল্টার অভ্যন্তরীণ ফ্ল পরিমিত থাকে এবং ওয়াটার সাকশন প্ল্যান্টের সাথে সহনশীল থাকে। যাদের বাজেট বেশি তারা ক্যানইস্টার ফিল্টার নিতে পারেন।
টপ ফিল্টারঃ
টপ ফিল্টার সাধারনত, অধিক ফ্লেএর হোয়ে থাকে এবং নন প্লান্টেড ট্যাঙ্কে এবং ৩ ফিটএর অধিক ট্যাঙ্কে ব্যাবহার হয়। এর অভ্যন্তরীণ ফ্ল অত্তাধিক তাই এই ফিল্টার ব্যাবহার করলে ফিল্টারের হেডের মুখে কর্ক লাগিএ ফ্ল নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কর্ক ফিল্টারের সাথেই দেয়া হয়।
ক্যানইস্টার ফিল্টারঃ
এই ফিল্টার সাধারনতো ৩ ফুটের অধিক ট্যাঙ্কে ব্যাবহার হয়। এই ফিল্টারে অধিক পরিমানে মিডিয়া ব্যাবহার করা যায় এবং মেকানিকাল ফিল্ট্রেসন বহুগুনেভালো হয়। এই ফিল্টারের দাম ও বেশি হোয়ে থাকে।
সাম্প ফিল্টারঃ
সাম্প ফিল্টার সবচেয়ে ভালো ফিল্ট্রেসনের দিক থেক। এতে আপনি প্রচুর পরিমান মিডিয়া, কটন দিতে পারবেন। সাম্প ২ ধরনের হয়। ব্যাক সাম্প এবং বটম সাম্প। ব্যাক সাম্প থেকে বটম সাম্পের ফিল্ট্রেসন ভালো হয়। ব্যাক সাম্প ট্যাঙ্কের পিছনে একটি পার্টিশন দিয়ে ফিল্টার চেম্বার বানানো হোয়ে থাকে। আর বটম সাম্পে ট্যাঙ্কের নিচে সাম্প বানিয়ে করা হয়। এর জন্য প্লাম্বিংএর দরকারহয় এবং উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন পাওয়ার হেডের দরকার পরবে।
সিওটু/ কার্বন ডাই অক্সাইড
অনেকে প্রশ্ন করেন, সিওটু ছাড়া প্যান্টেড করা যাবে? সিওটু প্ল্যান্টের খাবার, খাবার ছাড়া কয়দিন বাঁচিয়ে রাখবেন ?
প্ল্যান্টের বেচে থাকা,ভালো ভাবে বেড়ে উঠা এবং ভালো কালারের জন্য সিওটু অবশ্যই লাগবে।
সিওটু নিয়ে একটু আলাদা ডকুমেন্ট রয়েছে গ্রুপের ফাইল সেকশনে।
এর ৩ টি মেথড রয়েছে।
১. ইষ্ট এবং চিনি (DIY)
যা যা লাগবেঃ
- স্যালাইন সেট ব্যাবহার করে করতে হয়।
- ১ টি ১ লিটার বোতল এবং ১ টি ২ লিটারের বোতলের প্রয়োজন হয়।
- ডিফিউযার হিসেবে Sobo 320F পাওয়ার ফিল্টার লাগবে
- ২০০ গ্রাম চিনি, ১টা ইষ্ট আর সামান্য বেকিং সোডা
কিভাবে মিক্সচার বানাবেনঃ
প্রথমে ২ লিটার বোতলে প্রায় ১৭ ০০ এমএল পানিতে ২০০ গ্রাম চিনি ভালোভাবে মিক্স করে নিবেন। এরপর আরেকটি পাত্রে অল্প কুসুম গরম পানিতে ভালোভাবে ইষ্ট মিশেই নেবেন। এবার বোতলে ঢেলে , ইষ্ট এবং চিনি ভাবেভাবে ঝাঁকিয়ে মিশিএ নিবেন। মিশ্রণ তৈরি করার ১ ঘণ্টার মদ্ধেই সাধারনত CO2 রেডি হোয়ে যায়।
বিঃ দ্রঃ কিভাবে বোতলের সাথে স্যালাইন সেট সেটআপ করবেন, সেটা লিখে বুঝানো কষ্টকর, তাই Youtube এ ভিডিও দেখে নিবেন।
খরচের পরিমানঃ ১০০-১৫০ টাকা। ডিফিউযার বাদে।
২. বেকিং সোডা এবং সাইট্রিক এসিড (DIY Pressurized)
যা যা লাগবেঃ
- ২ লিটারের ২ টি বোতল
- CO2 কিট (Daraz or Ali Express থেকে পেয়ে যাবেন।)
- ডিফিউযার হিসেবে Sobo 320F পাওয়ার ফিল্টার অথবা আপনার পছন্দ মতো গ্লাস ডিফিউযার অর মেটাল ডিফিউযার নিতে পারেন। মনে রাখবেন, মেটাল ডিফিউযারের জন্য নুন্নতম ১ থেকে ১.৫ কেজি প্রেসার থাকতে হবে।
কিভাবে বানাবেনঃ
- কিটের গায়ে সব লিখাই থাকে
- ২০০ গ্রাম সোডা লাগবে সাথে ২০০ এমএল পানি
- ২০০ গ্রাম সাইট্রিক এসিডের সাথে ৬০০ এমএল পানি
খরচের পরিমানঃ ১৫০০-১৬০০ টাকা। ডিফিউযার বাদে।
৩. কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস সিলিন্ডার (Pressurized)
এই মেথডে সিলিন্ডারের জন্য CO2 রেগুলেটর লাগবে। এবং সিলিন্ডার লাগবে।
খরচের পরিমানঃ ৫৫০০ টাকা। ডিফিউযার বাদে।
লিকুইড ফার্টিলাইজার
মিডটেকের জন্য এটিও অন্যতম উপাদান। প্ল্যান্টের,ভালো ভাবে বেড়ে উঠা এবং ভালো কালারের জন্য লিকুইড ফার্টিলাইজার গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে। বাঁজারে অনেক ধরনের কমার্শিয়াল ফার্টিলাইজার পাওয়া যায় যদিও সেগুলো বেয়বহুল, তবে অনেকেই ডিআইঅয়াই ফার্টিলাইজার বিক্রি করে থাকেন। সেগুলউ বেশ ভালো।
COMMENTS