নতুন ট্যাঙ্ক সেটাপের সাথে সাথেই আমাদের ট্যাঙ্ক সাইক্লিং করতে হয়। যদিও আমরা গতানুগতিকভাবে ট্যাঙ্ক সাইক্লিং বলে থাকি, আসলে ট্যাঙ্ক সাইক্লিং হল...
নতুন ট্যাঙ্ক সেটাপের সাথে সাথেই আমাদের ট্যাঙ্ক সাইক্লিং করতে হয়। যদিও আমরা গতানুগতিকভাবে ট্যাঙ্ক সাইক্লিং বলে থাকি, আসলে ট্যাঙ্ক সাইক্লিং হল ট্যাঙ্ক এর ফিল্টারের মিডিয়া এর সাইক্লিং। ট্যাঙ্ক সাইক্লিং কি তা বুঝতে হলে প্রথমে আমাদের নাইট্রোজেন সাইকেল সম্বন্ধে একটা বেসিক ধারনা থাকা উচিৎ।
অতি সংক্ষেপে বলতে গেলে, আমাদের ট্যাঙ্কে মাছের বর্জ্য, মাছের শ্বাসক্রিয়া, মাছের না খাওয়া অতিরিক্ত খাবার, গাছের পুরনো পচা পাতা, ইত্যাদি থেকে এমনিয়া তৈরি হয়। এই এমনিয়া মাছের জন্য ক্ষতিকারক। নাইট্রিফাইং ব্যাকটেরিয়া এই ক্ষতিকারক এমনিয়াকে ভেঙ্গে নাইট্রাইট এ রুপান্তরিত করে, যা তুলনামুলকভাবে কম ক্ষতিকারক। কিন্তু নাইট্রাইট অতিরিক্ত মাত্রায় ক্ষতিকারক। ডিনাইট্রিফাইং ব্যাকটেরিয়া এই নাইট্রাইটকে ভেঙ্গে নাইট্রেট এ রুপান্তরিত করে। প্লান্টেড ট্যাঙ্কে কিছু নাইট্রেট গাছ শোষণ করে। বাকি নাইট্রেট পানিতে মিশে জমতে থাকে, যা আমরা নিয়মিত ওয়াটার চেঞ্জ করে কমিয়ে নাইট্রেট এর মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখি। ফ্রেশ ওয়াটার ট্যাঙ্কে যদি অতিরিক্তমাত্রায় কম অক্সিজেন সমৃদ্ধ এলাকা থাকে (যেমন, লাভা রক থাকলে তার ছিদ্রের ভিতরে) সেখানে কিছু এনেরোবিক ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতিতে কিছু নাইট্রেট ভেঙ্গে নাইট্রোজেন গ্যাস হয়ে ট্যাঙ্ক থেকে নির্গত হয়ে যায়। কিন্তু এটা ফ্রেশ ওয়াটার ট্যাঙ্কে অতি বিরল ও নগণ্য।
তাহলে, ট্যাঙ্ক সাইক্লিং হল আসলে আমাদের ফিল্টার মিডিয়াতে যথেষ্ট পরিমান নাইট্রিফাইং ও ডিনাইট্রিফাইং ব্যাকটেরিয়া জন্মানোর সময়, সুযোগ ও পরিবেশ সৃষ্টি করা, যেন ট্যাঙ্কের ভিতরে নাইট্রোজেন সাইকেল পূর্ণ হতে পারে; অর্থাৎ যাবতীয় বর্জ্য থেকে তৈরি হওয়া এমনিয়া ভেঙ্গে নাইট্রাইট ও অতঃপর নাইট্রেট এ রুপান্তরিত হতে পারে। এখানে উল্লেখ্য, বেনেফিশিয়াল ব্যাক্টেরিয়া ফিল্টার মিডিয়াতে বাস করে, ট্যাঙ্কের পানিতে নয়।
কিভাবে ট্যাঙ্ক সাইক্লিং করতে হবে সেই আলোচনায় যাওয়ার আগে বিভিন্নরকম ফিল্ট্রেশন সম্পর্কে ধারণা থাকা দরকার। ফিল্ট্রেশন মূলত তিন প্রকার -
১) মেকানিক্যাল - মেকানিক্যাল ফিল্ট্রেশন হল স্পঞ্জ বা সিনথেটিক কটন জাতীয় মিডিয়া, যার কাজ হল ট্যাঙ্কের পানিতে থাকা দৃশ্যমান বর্জ্য পদার্থকে ফিল্টার করা। স্পঞ্জ ফিল্টার ও পাওয়ার ফিল্টার মূলত মেকানিক্যাল ফিল্ট্রেশনের কাজ করে থাকে।
২) বায়োলজিক্যাল - বায়োলজিক্যাল ফিল্ট্রেশন হল বায়ো বল, সিরামিক রিং জাতীয় মিডিয়া। এই মিডিয়াগুলোর সারফেস এরিয়া অনেক বেশি এবং সেখানেই বেনেফিশিয়াল ব্যাক্টেরিয়া জন্মায় ও বাস করে।
৩) কেমিক্যাল - কেমিক্যাল ফিল্ট্রেশন মিডিয়ার উদাহরন হল এক্টিভেটেড কার্বন। কেমিক্যাল মিডিয়া সাধারনত সবসময় ব্যাবহার করা হয় না। শুধুমাত্র বিশেষ প্রয়োজনেই ব্যাবহার করা হয়; যেমন, কুপ্রামিন বা কপার ট্রিটমেন্ট এর পরে ট্যাঙ্ক থেকে কপার সরানোর জন্য, বা অন্য কোন অনাকাঙ্ক্ষিত দ্রবিভুত পদার্থ অপসারণ করার জন্য।
যেকোনো ট্যাঙ্কে মেকানিক্যাল ও বায়োলজিক্যাল ফিল্ট্রেশন দুটোই থাকা আবশ্যক। অনেকেই ভেবে থাকেন, স্পঞ্জ ফিল্টার বা পাওয়ার ফিল্টার থাকলে তাই যথেষ্ট। কারন স্পঞ্জের মধ্যেই বেনেফিশিয়াল ব্যাক্টেরিয়া বাস করে। কথাটা থিওরিতে ঠিক হলেও প্র্যাক্টিক্যালি ঠিক নয়। প্রথমতঃ স্পঞ্জ ফিল্টার বা পাওয়ার ফিল্টারে যতটুকু বেনেফিশিয়াল ব্যাক্টেরিয়া থাকে তা ট্যাঙ্কের বায়োলোডের তুলনায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যথেষ্ট নয়। দ্বিতীয়ত, যেহেতু স্পঞ্জ ফিল্টার বা পাওয়ার ফিল্টারের প্রধান উদ্দেশ্য হল মেকানিক্যাল ফিল্ট্রেশন, এর মিডিয়াতে জমা হওয়া ময়লা এর কারনে আমাদের প্রায়ই এর মিডিয়া ভাল ভাবে পরিষ্কার করতে হয় এবং তখন সেখানে যতটুকু বেনেফিশিয়াল ব্যাক্টেরিয়া ছিল তার বেশিরভাগই পরিষ্কার হয়ে যায়। সেই ব্যাকটেরিয়া আবার জন্মানো না পর্যন্ত ট্যাঙ্কের এমনিয়া, নাইট্রাইট, নাইট্রেট বাড়তে থাকে - মূলত নতুন করে সাইক্লিং শুরু হয়। তাই আমাদের ট্যাঙ্ক সেটআপের আগেই কি ফিল্টার প্রয়োজন তা হিসাব করা উচিৎ।
সাধারনত ধরা হয়, ট্যাঙ্কে যত লিটার পানি আছে প্রতি ঘন্টায় তার ৬ গুণের মত ফিল্ট্রেশন থাকা আবশ্যক। ধরা যাক, আপনার ট্যাঙ্কটি ২৪"x১৫"x১৮" সাইজের। তাহলে এর পানি ধারন ক্ষমতা হল ১০৬ লিটার। তার মানে আপনার ফিল্ট্রেশন হতে হবে প্রতি ঘন্টায় ৬৩৬ লিটারের মত। অর্থাৎ আপনার মেকানিক্যাল ফিল্ট্রেশন এবং বায়োলজিক্যাল ফিল্ট্রেশন দুইটিই লাগবে প্রতি ঘন্টায় প্রায় ৬৩৬ লিটারের মত। আপনি চাইলে মেকানিক্যাল ও বায়োলজিক্যাল ফিল্ট্রেশন এর জন্য আলাদা দুইটি ফিল্টার ব্যাবহার করতে পারেন। অথবা টপ ফিল্টার বা ক্যানিস্টার ফিল্টার ব্যাবহার করতে পারেন, যাতে আপনার পছন্দসই মিডিয়া ব্যাবহার করে সবধরনের ফিল্ট্রেশনই করতে পারেন। স্পঞ্জ ফিল্টারের ক্ষেত্রে একটি বিষয় লক্ষণীয় সেটি হল এয়ার পাম্পের ক্ষমতা। প্রতিটি এয়ার পাম্পের গায়ে তার ক্ষমতা উল্লেখ করা থাকে, যা সাধারনত ৪ লিটার পার মিনিট। এর মানে পাম্পটির ক্ষমতা মাত্র ২৪০ লিটার পার আওয়ার। তাহলে এই উদাহরণে একটা সাধারন এয়ার পাম্প দিয়ে স্পঞ্জ ফিল্টার লাগালে আপনার মেকানিক্যাল ফিল্ট্রেশনই যথেষ্ট হচ্ছে না, বায়োলজিক্যাল ফিল্ট্রেশন তো দুরের কথা। এই ট্যাঙ্কে স্পঞ্জ ফিল্টার ব্যাবহার করতে হলে আপনাকে অন্তত ১০ লিটার পার মিনিট ক্ষমতার এয়ার পাম্প ব্যাবহার করতে হবে। ধরা যাক আপনি ১০লি/মিন ক্ষমতার একটা বড় এয়ার পাম্প দিয়ে স্পঞ্জ ফিল্টারটি চালালেন। এতে আপনার পর্যাপ্ত মেকানিক্যাল ফিল্ট্রেশন হচ্ছে। এর পরেও আপনার বায়োলজিক্যাল ফিল্ট্রেশন দরকার। তাহলে আপনি একটি ৬৬০ লিটার পার আওয়ারের HOB ব্যাবহার করবেন। সব দিক বিবেচনা করে ট্যাঙ্কে শুধুমাত্র একটা টপ ফিল্টার ব্যাবহার করাই যথেষ্ট। সেখানে আপনি সিনথেটিক কটন ব্যাবহার করবেন মেকানিক্যাল ফিল্ট্রেশনের জন্য আর সিরামিক রিং ব্যাবহার করবেন বায়োলজিক্যাল ফিল্ট্রেশনের জন্য। টপ ফিল্টারে HOB এর থেকে অনেক বেশি জায়গা থাকে দেখে আপনি অনেক বেশি পরিমান বায়োলজিক্যাল ফিল্ট্রেশন মিডিয়া ব্যাবহার করতে পারবেন। যত বেশি বায়োলজিক্যাল ফিল্ট্রেশন মিডিয়া থাকবে, তত বেশি বেনিফিশিয়াল ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারবে এবং আপনার ট্যাঙ্কের পানির মান তত ভাল থাকবে।
আপনার ট্যাঙ্কের পানির ভলিউম অনুযায়ী ফিল্টার সিলেকশনের জন্য এই লিঙ্কটি পড়ুন।
এবার আসি কিভাবে ট্যাঙ্ক সাইকেল করব আমরা। প্রথম সেটআপের পরে ঠিক ফিল্টার দিয়ে ট্যাঙ্ক পানি ভরতি করে ফেলে রাখলে সাইকেল হবে না। ব্যাকটেরিয়া জন্মানোর ও বংশবৃদ্ধির জন্য ব্যাক্টেরিয়ার খাদ্যের প্রয়োজন, যা হল এমনিয়া। এক্ষেত্রে সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হল ghost feeding পদ্ধতি। এর মানে হল, আপনার ট্যাঙ্কে যত মাছ থাকবে সেই পরিমান খাবার প্রতিদিন ট্যাঙ্কে দিতে হবে। এই খাবার পচে এমনিয়া তৈরি হবে। এই এমনিয়াকে ভেঙ্গে নাইট্রাইট করার জন্য নাইট্রিফাইং ব্যাক্টেরিয়ার জন্ম হবে। তারপর সেই নাইট্রাইটকে ভেঙ্গে নাইট্রেট করার জন্য ডিনাইট্রিফাইং ব্যাক্টেরিয়ার জন্ম হবে। এক্ষেত্রে সপ্তাহে অন্তত দুইদিন ২৫% এর মত ওয়াটার চেঞ্জ করতে হবে। ওয়াটার টেস্ট কিট এক্ষেত্রে একটি অতি জরুরি জিনিস। প্রথম সপ্তাহে এমনিয়া টেস্ট করতে হবে। এমনিয়া এর পরিমান ৩-৫পিপিএম থাকতে হবে। ৩পিপিএম এর নিচে থাকলে যথেষ্ট নাইট্রিফাইং ব্যাক্টেরিয়া জন্মানোর সুযোগ পাবে না। আর ৫পিপিএম এর বেশি হলে পানি বেশি টক্সিক হয়ে যাবে। এমনিয়া টেস্ট এর রেসাল্ট দেখে খাবারের পরিমান বাড়াতে বা কমাতে হবে। দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে এমনিয়া এর সাথে নাইট্রাইট টেস্ট করতে হবে। ধিরে ধিরে এমনিয়া কমতে থাকবে এবং নাইট্রাইট বাড়তে থাকবে। তারপর এক সময় নাইট্রাইট এর পরিমাণ কমে যাবে। তখন থেকে এমনিয়া, নাইট্রাইট ও নাইট্রেট তিনটি টেস্ট ই করতে হবে। যখন এমনিয়া ০, নাইট্রাইট ০ ও নাইট্রেট <৫পিপিএম থাকবে তখন বুঝতে হবে যে ট্যাঙ্ক সাইক্লিং পূর্ণ হয়েছে। তখন আমরা ধিরে ধিরে মাছ ছাড়তে পারব। এখানে উল্লেখ্য, কখনও একসাথে বেশি মাছ ছাড়বেন না। হঠাৎ বেশি মাছ ছাড়লে আকস্মিক এমনিয়া বেড়ে যাবার কারণে আপনার ট্যাঙ্কের সাইকেল নষ্ট হয়ে যাবে এবং আবার ট্যাঙ্ক সাইক্লিং শুরু হবে। অতিরিক্ত এমনিয়া বৃদ্ধির কারণে মাছ মারাও যেতে পারে। । ধরা যাক, ট্যাঙ্কে আপনি ২০টা কার্ডিনাল টেট্রা ছাড়তে চান। প্রথমে ৫টা ছাড়ুন, তার পরের সপ্তাহে আর ৫টা, আর তার পরের সপ্তাহে বাকি ১০টা ছাড়ুন। কখনও ট্যাঙ্কের মাছের সংখ্যা যেন দ্বিগুণের বেশি না বাড়ানো হয় সেটা খেয়াল রাখবেন। আর প্রতি সপ্তাহে ওয়াটার চেঞ্জের আগে ওয়াটার টেস্ট করবেন। আপনার টার্গেট হল এমনিয়া ০, নাইট্রাইট ০ আর নাইট্রেট <৫পিপিএম রাখা। প্রয়োজনে বায়োলজিক্যাল ফিল্ট্রেশন মিডিয়া ও মাছের সংখ্যা বাড়িয়ে বা কমিয়ে ট্যাঙ্কের ভারসাম্য আনতে হবে।
সাধারণত নতুন ট্যাঙ্ক সাইকেল হতে ৪-৬ সপ্তাহের মত সময় লাগে। ট্যাঙ্ক সাইক্লিং এর ক্ষেত্রে কিছু shortcut আছে যা সাইক্লিং এর সময় কমিয়া আনবে। একটি উপায় হল অন্য ট্যাঙ্কে ব্যাবহ্রিত সাইকেল্ড ফিল্টার মিডিয়া ব্যাবহার করা। এক্ষেত্রে ফিল্টার মিডিয়া সাইকেল্ড অবস্থাতেই আছে দেখে আপনি ২-৩ দিনের মধ্যেই ট্যাঙ্কে মাছ ছাড়তে পারবেন। তারপরেও অবশ্য এই ২-৩ দিন ghost feeding করে ওয়াটার টেস্ট করে নিশ্চিত হয়ে মাছ ছাড়া উচিৎ। আরেকটি উপায় হল, কোন সাইকেল্ড স্পঞ্জ ফিল্টার থাকলে তা নতুন ট্যাঙ্কএর পানিতে নিংড়ে দেয়া। ঐ ব্যাকটেরিয়াগুলো থেকেই নতুন ব্যাকটেরিয়া বংশবৃদ্ধি করবে। বাজারে "বেনেফিশিয়াল ব্যাকটেরিয়া" হিসাবে কিছু পণ্য কিনতে পাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে আমার ধারণা এগুলো কোন কাজের না। ব্যাকটেরিয়া বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য ও অক্সিজেনের প্রয়োজন। আপনি নিজেই চিন্তা করুন, বোতলজাতকৃত এই ব্যাকটেরিয়া না পাচ্ছে কোন অক্সিজেন, আর না পাচ্ছে খাদ্য হিসেবে কোন এমনিয়া সোর্স। ঐ বোতলে যদি কিছু এমনিয়া থেকেও থাকে, ব্যাকটেরিয়া তা শেষ করে ফেলার পরে না খেয়ে মারা যাবে। আর বেনেফিশিয়াল ব্যাকটেরিয়া বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেন ও পাচ্ছে না ঐ বোতলের ভেতরে।
টেস্ট কিট না থাকলেও আপনি ghost feeding করে ট্যাঙ্ক সাইক্লিং করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আপনার ট্যাঙ্কে মাছ থাকলে যতটুকু খাবার দিতেন, সেই পরিমান খাবার প্রতিদিন ট্যাঙ্কে দিবেন। প্রথম সপ্তাহে প্রতি দুই দিন পর পর ৫০% ওয়াটার চেঞ্জ করবেন। দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রতি দুই দিন পর পর ৩০% ওয়াটার চেঞ্জ করবেন। তৃতীয় ও চতুর্থ সপ্তাহে প্রতি তিন দিন পর পর ৩০% ওয়াটার চেঞ্জ করবেন। পঞ্চম সপ্তাহে আপনি যতগুলো মাছ রাখবেন তার অর্ধেক মাছ ছাড়বেন এবং ওই সপ্তাহেও প্রতি তিন দিন পর পর ৩০% ওয়াটার চেঞ্জ করবেন। ষষ্ঠ সপ্তাহে বাকি মাছ গুলো ছাড়বেন এবং ওই সপ্তাহেও প্রতি তিন দিন পর পর ৩০% ওয়াটার চেঞ্জ করবেন। এর পর থেকে প্রতি সপ্তাহে একবার অন্তত ৩০% ওয়াটার চেঞ্জ করবেন। আশা করা যায়, আপনার ট্যাঙ্কটি এই ছয় সপ্তাহে ঠিকভাবে সাইকেল্ড হয়ে যাবে।
টেস্ট কিট সম্বন্ধে কিছু কথা বলে শেষ করছি। আমাদের এই হবি এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হল টেস্ট কিট। দুর্ভাগ্যবশত আমরা এটাকে গুরুত্ব দেই না। আর আমাদের দেশেও কেউ বিক্রি করে না। কিন্তু আমরা খুব সহজেই amazon বা ebay থেকে এটা আনিয়ে নিতে পারি। API Freshwater Master Test Kit আনতে খরচ হবে ২,৪০০ টাকার মত। আর এতে ৮০০ এর ও বেশি টেস্ট করা যাবে। অর্থাৎ টেস্ট প্রতি খরচ মাত্র ৩ টাকা! এতটুকু সামান্য খরচ আমরা আমাদের শখের জন্য অবশ্যই করতে পারি ও করা উচিৎ। আমাদের শখের মাছের ভাল-মন্দ সবই ট্যাঙ্কের পানির মানের উপর নির্ভরশীল। ট্যাঙ্কের পানিতে দৃশ্যমান ময়লা না থাকা আর ট্যাঙ্কের পানি ঝকঝকে পরিষ্কার হওয়া মানে মেকানিক্যাল ফিল্ট্রেশন ভাল। কিন্তু তার মানে এই নয় যে আপনার ট্যাঙ্কের এমনিয়া, নাইট্রাইট বা নাইট্রেট এর পরিমাণ ঠিক আছে বা আপনার বায়োলজিক্যাল ফিল্ট্রেশন ভাল। আমাদের যেই মাছ আছে সেটাই আমাদের প্রিয়। সেটা ২৫ টাকা দামের নিওন টেট্রাই হোক বা লাখ টাকা দামের এরোয়ানাই হোক - নিশ্চই আমরা চাই সেই মাছটি ভাল থাকুক, সুস্থ থাকুক। আর টেস্ট কিট ছাড়া আমরা আসলে ভাগ্যের উপরেই ছেড়ে দিচ্ছি সব - মাছ বাঁচলে বাঁচবে, আর না বাঁচলে আরেকটা কিনব। তাই সবার কাছে অনুরোধ থাকল, আমরা সঠিক পথে মাছ পালি। ট্যাঙ্ক সাইক্লিং কি, কিভাবে করতে হবে, ফিল্ট্রেশন কেমন লাগবে - এসব জেনে বুঝে ঠিকভাবে ফিশকিপিং করি।
বিস্তারিত আলোচনার জন্য এই ভিডিওটি দেখুনঃ
নোটঃ এই লেখাটি সম্পূর্ণই আমার ব্যাক্তিগত মতামত ও অভিজ্ঞতা থেকে লেখা। কোন ব্যাক্তি, পণ্য বা প্রতিষ্ঠানের সাথে কোনভাবেই সংশ্লিষ্ট নয়।
© লেখক - সালমান খান
COMMENTS