গুগোল ইউটিউবে দেখে ১ম বার নিজে নিজেই রিস্ক নেই এমন একটা ব্যাকগ্রাউন্ড বানিয়ে একুরিয়ামের সৌন্দোর্য আরো বাড়ানোর। আলহামদুলিল্লাহ্ ১ম চেষ্টায় স...
গুগোল ইউটিউবে দেখে ১ম বার নিজে নিজেই রিস্ক নেই এমন একটা ব্যাকগ্রাউন্ড বানিয়ে একুরিয়ামের সৌন্দোর্য আরো বাড়ানোর। আলহামদুলিল্লাহ্ ১ম চেষ্টায় সাফল্য পেয়েছি। অনেকেই জানতে চেয়েছেন, তাই তাদের জন্য পুরো ব্যাপারটা তুলে ধরলাম।
যা যা লাগবেঃ
১. কর্কশিট
২. সিলিকন গ্লু, গ্লু গান (আমার গান লাগে নাই)
৩. ফেবিকল গ্লু
৪. সিমেন্ট
৫. ছুঁড়ি বা কাঁটার, মার্কার, সিরিজ কাগজ
কিভাবে কি করবেন-
স্টেপ ১ঃ শাহবাগ বা কাটাবন থেকে 3/4 সাইজের কর্কশিট কিনে আনুন। থিকনেস হাফ ইঞ্চি বা ৬ সে.মি.। এর কম আনলে ভেঙে যাবে, বেশি আনলে কাটকাটি বেশি করতে পারবেন না, ওজন বেড়ে যাবে। দুই পিস কিনুন। মানে একই মাপের দুই পিস। যেমন আমি 4X2 ফিটের দুটা নিয়েছি। দাম নির্ভর করে আপনি কতটা দামাদামি করতে পারবেন, আমার থেকে দুই পিস ৩০০টাকা নিয়েছে, শাহবাগ মোড়ের ফুলের দোকান গুলো থেকে।
স্টেপ ২ঃ এবার একটা কর্কশিটের উপর মার্কার দিয়ে পাথর এর শেপে আকুন নিজের ইচ্ছা মত, ছোট বড়, গোল এবড়ো থেবরো। আমি এভাবে একেছি।
এবার কাঁটার দিয়ে এগুলো কে কাটুন, ঠিক যেই মাপে একেছেন। কাঁটার পর এগুলোর কিনার সিরিজ কাগজ দিয়ে ঘষুন, না ঘষলে আঠা এবং সিমেন্ট বসবে না, শেপও আসবে না। এবার টুকরো গুলো আলাম আরেকটা টুকরো যে আছে তার উপর ফেবিকল দিয়ে জোড়া দিন। সিলিকন গ্লু ইউজ না করার ট্রাই করবেন, সিলিকনে ফোমের সাথে ফোম থাকে না। লাগানোর পর একদিন শুকান।
স্টেপ ৩ঃ এবার সাইজের উপর ডিপেন্ড করে পুরোটাকে ভাগ করুন, যেমন আমি 4x2 ফিটকে ৩ভাগ করেছি। এটার কারণ হলো ফোম পানিতে ডুবে না, যখন একুরিয়ামে লাগাবেন তখন প্রেশারে আঠা ছুটে যেতে পারে, তাই প্রেশার কমানোর জন্য পুরোটাকেই খন্ড করে ফেলুন, তবে আপনার ২ফিটের ট্যাংক হলে দরকার নেই, এর বড় হলে সেই অনুপাতে কাটুন কাঁটার দিয়ে। ছবিতে দেখবেন কিভাবে কেটেছি আমি।
স্টেপ ৪ঃ এবার সিমেন্ট দেয়ার পালা, পাতলা করে সিমেন্ট গোলান, পানি বেশি সিমেন্ট কম। ১ম লেয়ারটা যাস্ট ফোমে সিমেন্টে ছোয়া দেয়ার জন্য, রঙ করার ব্রাশ দিয়ে সিমেন্ট দিয়ে ব্রাশ করুন। এর পর একদিন শুকান। ছবি নিচে-
স্টেপ ৫ঃ শুকানো হলে পরেরদিন পানির স্প্রে করুন, এটা আবশ্যক। কেন সেটা সবার শেষে বলছি। স্প্রে করা পানি শুকিয়ে গেলে এবার সিমেন্টের সেকেন্ড লেয়ার। গাড়ো লেয়ার হবে, ঘন করে সিমেন্ট গোলান, হাতে গ্লাবস পরে নিবেন, আমি খালি হাতেই দিসি :P হাতে সিমেন্ট নিয়ে পুরোটা তে দিন, যত কোনা আছে সব ঢেকে দিন, এটাই মেইন লেয়ার কিন্তু। সিমেন্ট দেয়া হলে দেখবেন সিমেন্টের উপর হাতের আঙ্গুলের রেখা, দেখতে অবশ্যই ভালো লাগবে না, তাই সমান শক্ত কিছু একটা দিয়ে সিমেন্ট গুলোকে সমান করে দিন, আস্তর করার সময় দেখবেন মিস্ত্রিরা যেভাবে সমান করে। এই লেয়ার ২/৩ দিন শুকান। ছবি নিচে-
স্টেপ ৬ঃ শুকানো হলে পানি স্প্রে করুন, শুকিয়ে গেলে ১ম সিমেন্ট লেয়ারের মত আরেকটা পাতলা লেয়ার দিন কালার আনার জন্য। এরপর একদিন শুকান।
স্টেপ ৭ঃ এবার একুরিয়ামে ফিট করার পালা। গ্লাসে যত বেশি পারেন সিলিকন গ্লু দিয়ে শক্ত করে ব্যাকগ্রাউন্ড টা লাগিয়ে দিন, লাগানোর পর ২/৩ দিন টাইম দিন শুকানোর জন্য।
ফাইনাল স্টেপঃ এবার কিছু না, শুধু পানি ড্রেইন অ্যান্ড ফিল করুন প্রতিদিন একবার। মাছ ছারবেন না ভুলেও, মারা যাবে, যদি আপনার ট্যাংকে আগে থেকে মাছ থাকে মাছ গুলোকে সরিয়ে নিন সেফ জায়গায়, নয়তো বেকগ্রাউন্ড টা ফিট না করে অন্য কোথাও পানিতে চুবিয়ে ফিল অ্যান্ড ড্রেইন করুন। আগের বার স্প্রে করার রিজন বলি নাই, এবার বলছি। সিমেন্টের কারনে পানির PH এর তারতম্য হয়, যেটা মাছের জন্য ভালো না, তাই যত বেশি ফিল অ্যান্ড ড্রেইন করবেন তত আস্তে আস্তে এটা পানির PH সহায়ক হয়ে যাবে। আশা করি ১০/১৫ দিন ফিল অ্যান্ড ড্রেইন করলে আর সমস্যা হবে না। আমার ব্যাকগ্রাউন্ড লাগানোর আজকে ১৫ দিন, আজকে টেস্ট করার জন্য টাইগার বার্ব ছাড়ি কিছু, আলহামদুলিল্লাহ দে আর এলাইভ অ্যান্ড কিকিং ২/৩ দিন পর আরো বড় মাছ এনে দেখবো কি অবস্থা হয়। ১/২দিন রেখে এর পর আমার আসল মাছ ছাড়বো। সিউকিউরিটির ব্যাপারে নো রিস্ক।
টোটাল খরচ ৪x২ ফিট ব্যাকগ্রাউন্ডে-
- কর্কশিট - ৩০০
- সিলিকন গ্লু - ১২০
- কাঁটার - ৪০
- সিমেন্ট ২ কেজি - ৩০
- সিরিজ কাগজ - ২০
- টোটাল - ৫০০ +/-
শেষ হয়ে গেলে নিজের রুচি মত বাকিটা সাজিয়ে তুলুন। কোন প্রশ্ন থাকলে করুন, ট্রাই করবো হেল্প করার। ধন্যবাদ।
© লেখক - শিবলী ইসলাম
COMMENTS